
প্রকাশিত: Wed, Jan 18, 2023 4:00 PM আপডেট: Sat, May 10, 2025 8:58 PM
শিক্ষা-ব্যবস্থা : বাস্তবসম্মত উন্নত পলিসি কী?
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্কুল আছে যার নাম, ‘ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ’। বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত ভালো মানের সরকারি স্কুল আছে যার নাম ‘গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল’। এইসব স্কুলের নামে ‘ল্যাবরেটরি’ শব্দটি যুক্ত কেন? কারণ এইগুলো কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যেমন ‘ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ এডুকেশন এ্যান্ড রিসার্চের ল্যাবরেটরি। আর ‘গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল’ হলো সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ঢাকার ল্যাবরেটরি। গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল আগে খুবই ভালো মানের ছিল তবে এখনও মন্দ না। ‘ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ও একসময় খুবই ভালো ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক আছে যারা এই স্কুলের ছাত্র ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছেলেমেয়েরা এই স্কুলে পড়তো। এখন অন্তত শিক্ষকদের সন্তানরা এখানে আর পড়ে না। এই স্কুল হওয়ার কথা বাংলাদেশের সেরা স্কুলগুলোর অন্যতম অথচ এই স্কুলটি এখন ঢাকা শহরের সবচেয়ে খারাপ স্কুলগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।
যারা নিজেদের ল্যাবকে সেরা বানাতে পারে না, যারা নিজেদের ল্যাবকে অনুকরণীয় আর অনুসরণীয় বানাতে পারেনা তারা কীভাবে দেশের স্কুল কলেজের শিক্ষা ও কাররিকুলামে ভালো ভূমিকা রাখবে? প্রশ্ন হলো এই স্কুলটি এত খারাপ কি করে হলো? এই স্কুলের খারাপ হওয়ার জন্য দায়ী খারাপ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পদ্ধতি। শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার প্রধানতম দায়িত্বে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। দেখা গেছে প্রভাবশালী শিক্ষকদের স্ত্রী/স্বামী, পুত্র/কন্যা শালা/শালীদের চাকুরীর ক্ষেত্র বানিয়ে এই স্কুলটিকে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাতে কি ইন্সটিটিউট অফ এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের দায় নাই হয়ে যায়? ঘড় বীপঁংব পধহ নব নরম বহড়ঁময ঃড় লঁংঃরভু ঃযরং ফবমৎধফধঃরড়হ! প্রশাসনের এইসব অযাচিত হস্তক্ষেপ থামানোর জন্য তারা কি কোন ভূমিকা রেখেছে? ঊহফ ড়ভ ঃযব ফধু অর্থাৎ দিন শেষে এইটাতো ওঊজ এর ল্যাব।
আরেকটি কথা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইনস্টিটিউট কেমন হওয়া উচিত বা কি তাদের কাজ হওয়া উচিত সেটাও হয়তো জানি না। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইনস্টিটিউট কেন খোলা হয়? ইনস্টিটিউট হয় গবেষণার জন্য। আর সাথে বড়জোর রিসার্চ বেসড পোস্ট-গ্রাজুয়েট ডিগ্রি যেমন মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি দিতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইনস্টিটিউটগুলোও আন্ডার গ্রাজুয়েট ডিগ্রি দেওয়া শুরু করে। কেন দিবে? আন্ডার গ্রাজুয়েট ডিগ্রি দেওয়ার প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়েই বিভাগ খুলতে পারে। আমরা ইনস্টিটিউটগুলোতে আন্ডার গ্রাজুয়েট খুলে এর গবেষণার দায়টা কমিয়ে দিয়েছি। এর ফলে এডুকেশন ও রিসার্চ-এ কাক্সিক্ষত মাপের গবেষক বা স্কলার তৈরি হয়নি। যদি হতো তাহলে তারাই পারতো দেশের স্কুল কলেজের সঠিক মানসম্পন্ন কাররিকুলাম তৈরি করতে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে সম্ভবত মোট ১৩টি শিক্ষা কমিশন হয়েছে। সরকার যাদের শিক্ষানীতি প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে আইইআরের শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতির হার নগন্য। আর শিক্ষা কমিশনের সেইসব রিপোর্ট বাস্তবায়নের হার তার চেয়েও কম। অর্থাৎ এই দেশের সরকারও চায় না এই দেশ একটি বাস্তবসম্মত উন্নত পলিসির মাধ্যমে শিক্ষা-ব্যবস্থা চলুক। প্রতিটি সরকার এসে একটি বা দুটি কমিশন করেছে। আর সেইসব রিপোর্ট আলমিরাতে সাজিয়ে রেখেছে ংযড়ঢ়িরবপব হিসাবে। তারা কখনো মিন করেনি। শিক্ষা কমিশনের প্যারালাল পলিসি বানিয়েছে আমলারা। তো যা হবার তাই হচ্ছে। লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
